দীর্ঘ ৫৭ বছর পর জলপাইগুড়ি-ঢাকা রুটে ‘মিতালী’
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ির সঙ্গে রেলপথে যোগাযোগ শুরু হলো ঢাকার। আর এতে দীর্ঘ ৫৭ বছর পর এই রেলপথে ট্রেন চলা দেখলো দুই বাংলার মানুষ।
দুই দেশের নাগরিকদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে নিয়ে বুধবার সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে নির্ধারিত সময়ে চাকা গড়ায় বহুল প্রতীক্ষিত মিতালী এক্সপ্রেসের। সবুজ পতাকা দেখিয়ে ভার্চুয়ালি এই মিতালী এক্সপ্রেসের শুভ উদ্বোধন করেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
এদিন দিল্লি থেকে ভার্চুয়ালি ভারতীয় রেলমন্ত্রী বৈষ্ণব বলেন, ভারতীয় রেলের কাছে খুবই একটা খুশির মুহূর্ত। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে যে সম্পর্ক তা দাঁড়িয়ে রয়েছে আমাদের দুই দেশের মধ্যে ভাগাভাগি করা ঐতিহ্যে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। সে ক্ষেত্রে এই এক্সপ্রেস ট্রেনটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে মাইলস্টোন হয়ে দাঁড়াবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। একাত্তরের যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের যে সেক্টর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা হলো রেল। রেলের বড় বড় ব্রিজ, রেল লাইন, কারখানাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে।
ধ্বংসপ্রাপ্ত রেল ব্যবস্থাকে গড়ে তোলার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১১ সালে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়। অবিভক্ত ভারতে যে রেল লাইনগুলো ছিল, যে রেল পরিষেবা ছিল সেগুলোকে পুনরায় চালু করার জন্য আমরা কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
মন্ত্রী বলেন, সপ্তাহে দু’দিন এই মিতালী ট্রেন চালু থাকবে। কিন্তু পরবর্তীতে যদি সম্ভব হয় তবে সপ্তাহে পাঁচদিন চালানোর জন্য ভারতের কাছ প্রস্তাব রাখব। কারণ এই পথটি বাংলাদেশের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
ভারতীয় রেলের সিপিআরও সব্যসাচী দে বলেন, উদ্বোধনের পর মাত্র ১৮ জন যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। তবে দিন দিন এই যাত্রীসংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়বে বলে আশাবাদী দুই দেশের রেলমন্ত্রী।
মিতালী এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছাড়বে রোববার ও বুধবার এবং ঢাকা থেকে ছাড়বে সোমবার ও বৃহস্পতিবার। ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য পাসপোর্ট ভিসা আবশ্যক। তবে এখনই ট্রেনে খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না প্যাসেঞ্জারদের জন্য।