শুটিং সেটের অভিজ্ঞতা ও একজন শিল্পীর জীবন!

0

শুটিং সেটে আধা ঘন্টা লেটে পৌঁছালে একজন শিল্পীকে কতো কথাই না শুনতে হয়! অথচ পরিচালক তার সিকোয়েন্স শেষ করে তবেই একজন শিল্পীকে প্যাকআপ ঘোষণা করেন। তার টার্গেট ফুল করে তবেই মুক্তি। অবশ্যই একটার পক্ষে যুক্তি আছে। মেনেও নিতে হবে। এবার আসুন শুটিং শেষে শিল্পীদের যেই প্যারা নিতে হয়। সন্মানী দেওয়ার সময় বাজেট কম, সম্পর্কের খাতিরে সেটাও মেনে নেন অনেকেই।

কাজ শেষে অনেক সময় সন্মানী নিতে গেলে পরিচালক মহোদয় বলেন, ভাই আপনার নগদ বা বিকাশ নাম্বারটা দেন কিছুক্ষনের মধ্যেই পাঠিয়ে দিচ্ছি। সেটা অনেকেই দেন আবার অনেকের বিকাশ, নগদ, রকেটের নেটওয়ার্কে ঝামেলার সৃষ্টি হয়ে যায়!!! সহজে সেই ঝামেলা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। পরে একটা সময় সেই সমস্যার সমাধান হয়ে হয়।

সবচেয়ে বড় সমস্যা শুটিং শেষে ঘরে ফেরা নিয়ে। লাইট ক্যামেরার গাড়িতে অনেক সময় জায়গা হয় না। শিল্পী বহনকারীর গাড়ীতে শিল্পীরা উঠে বসে আছেন ড্রাইভার সাহেবের খবর নাই, প্রোডাকশন ম্যানেজার, প্রোডিউসার আর পরিচালক ড্রাইভারের সাথে তেলের হিসাব, গ্যাসের হিসাব করার সময়টা তখনই যেনো করতে হবে।

অনেক ইউনিটেই রাত ১১ টার পরে শুটিং শেষ করে ঐ দিন আর রাতের খাবারের আয়োজন করেন না। সেটাও হজম করে গেলেন শিল্পীরা। এর পরে শিল্পীদের নামিয়ে দেওয়ার সময়কার প্যারা আরো কঠিন। গাড়ীতে গাদাগাদি করে রওনা দেওয়া, কোন রুট দিয়ে যাবে সেটা নিয়ে চালকের সাথে যুদ্ধ। বড়ো সমস্যা মহিলা শিল্পীদের নামানোর সময়। এতো রাতে মহিলাদের নামিয়ে দেয়ার বিষয়টি অধিকাংশ সময় দেখা যায় চালকের ইচ্ছেই প্রধান। পরে সিনিয়র শিল্পীদের সহযোগিতায় এর একটা সমস্যার সমাধান হয়। কিন্তুু সেটা খুবই কম। এটাতো গেলো একটা মোটামুটি ইউনিটের বিষয়।

এবার আসুন কনটেন্ট নির্মাতা কিছু পরিচিত পরিচালকদের কথা বলি। কাজ শেষে অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিল্পীটি কিভাবে বাসায় পৌঁছাবে সে বিষয়ে শুটিং শেষ হওয়ার আগে থাকেন দায়িত্বশীল একজন ব্যাক্তি! কিন্তু পরে তার আর খবর নেই। এই হরতাল অবরোধে একজন শিল্পী কিভাবে তার বাসায় পৌঁছাতে পারবে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। এমনও দেখেছি অনেক নারী অভিনেত্রীকে তার নিজের দায়িত্বে আসতে হয়। ঠিক মতো এসে পৌঁছেছে কিনা সেই খবরটা জানারও প্রয়োজন মনে করেন না অনেকে। আমি নিজে ছোট বড়ো অনেক প্রোডাকশনে কাজ শেষে ফিরে আসার সময় অনেককেই বাসায় পৌঁছে দিয়ে তারপরে নিজে বাসায় এসেছি।

এই বিষয়গুলো সত্যিই খুব কষ্টদায়ক। তারপরের মিডিয়াটাকে ভালোবেসে একজন শিল্পী এসব মেনে নেন দুইটি কারণে এক ভুক্তভোগী সেই শিল্পী সত্যিই মিডিয়াটাকে ভালোবাসেন আর অন্যটি হলো এসব প্রতিবাদ করতে গিয়ে কাজ হারানোর ভয়ে। সত্যি কথা সব সময় তিতা। দিনের পর দিন মিডিয়া সেক্টরে এই সমস্যা গুলো তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। ইউটিউব কনটেন্ট থেকে টেলিভিশন, চলচ্চিত্র সব ক্ষেত্রেই একই অবস্থা !

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.