মাত্র ১৩ বছর বয়সে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ উদ্যোক্তা
মামার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তার মাথায় এক উদ্যোগ গ্রহণের ভাবনা আসে। সামনে পরীক্ষা ছিল। তাই বইপত্র নিয়েই মামাবাড়ি গিয়েছিল তিলক। কিন্তু, সেখান থেকে ফেরার সময়, বইপত্র সেখানেই ফেলে এসেছিল। যদিও পরীক্ষার পড়ার জন্য বইগুলো তার প্রয়োজন ছিল। কোনও এক প্রয়োজনে সে বিভিন্ন পার্সেল ডেলিভারি সংস্থাকে অনুরোধ করেছিল যাতে তার পার্সেলটা সেই দিনই ডেলিভারি করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ জায়গাতেই একইদিনে ডেলিভারি করার পরিষেবা ছিল না। আর যাদের সেই পরিষেবা ছিল, তা ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সে ভাবনা থেকেই সে ভেবেছিল, তার মতো অবস্থা অনেকেরই হতে পারে। অনেকেরই জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত পার্সেল ডেলিভারির প্রয়োজন হতে পারে।
এরপর থেকেই সে একটি সংস্থা তৈরির কথা ভাবে। যে সংস্থা একইদিনে কোনও শহরের মধ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পার্সেল ডেলিভারি করবে। সেই কথা সেই কাজ। গড়ে তোলে নতুন সংস্থা ‘পেপার এন পার্সেল’। পরিষেবাটি যেন ব্যয়বহুল না হয় তাতে ছিল তার বিশেষ দৃষ্টি। কারণ, তাহলে সে পরিষেবা বেশি লোক ব্যবহার করতে পারবে না। তরুণ উদ্যোক্তার অনুপ্রেরণা ছিল মুম্বাইয়ের ডাব্বাওয়ালারা। অল্প পয়সায় দ্রুত খাবার ডেলিভারি করার জন্যই পরিচিত এই ডাব্বাওয়ালারা।
তার ব্যবসায় প্রাথমিক আর্থিক সহায়তা করেছিলেন তিলকের বাবা। এরপর সে ডাব্বাওয়ালাদের সঙ্গে কথা বলে সাশ্রয়ী মূল্যে শহরের মধ্যে পার্সেল সরবরাহ করার বিষয়ে। তিলক তার ব্যবসাকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসে। ২০১৮ সালের মধ্যে অদম্য উৎসাহ নিয়ে তার সংস্থাকে নতুন উচ্চতায় তুলে নিয়ে গিয়েছিল তিলক। তিলকের সংস্থার এখন বছরে আয় ১০০ কোটি টাকার বেশি! সংস্থার সরাসরি কর্মীর সংখ্যা দুইশর বেশি। আর ডাব্বাওয়ালা কাজ করেন আরও তিনশর মতো। প্রতিদিন গড়ে ১২০০ পার্সেল ডেলিভারি করে তার সংস্থা। ২০২১-এর হিসেব বলছে, তিলকের মোট সম্পদ ৬৫ কোটি টাকার উপরে। মাসে সে আয় করে ২ কোটি টাকা! ছোট একটি উদ্যোগ একজন মানুষকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করাতে পারে তার নজির সৃষ্টি করেছেন তিলক। কাজেই নতুন যারা উদ্যোগ নিচ্ছেন তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা এমনই হওয়া উচিত।