রাষ্ট্রের সকল প্রতিশ্রুতি ধ্বংসের জন্য সরকার দায়ী

0

গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসনসহ রাষ্ট্রের সকল প্রতিশ্রুতি ধ্বংসের জন্য বর্তমান সরকারকে দায়ী করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে মিডিয়া ব্রিফিংকালে এই অভিযোগ করে দলটির নেতারা।

রবিবার বিকেল ৪ টায় বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই মিডিয়া ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে মানবাধিকার পরিস্থিতি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বক্তব্য রাখেন পার্টির যুগ্ম আহবায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। সরকারের উন্নয়নের হালচাল নিয়ে কথা বলেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানান পার্টির যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডাঃ মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, গত ২২ এপ্রিল প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মত প্রকাশ ও গণ মাধ্যমের স্বাধীনতা, ইন্টারনেট ব্যবহারে বাধা, রাজনৈতিক সভা সমাবেশে বাধা, বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের উপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে অপরাধ কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায় মুক্তির বিষয় উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরও এই সময়ের মধ্যে চুরানব্বইজন মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মারা গেছেন, গুম ও অপহরণ করা হয়েছে বত্রিশজন ব্যক্তিকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিবেদনে বর্তমান বাংলাদেশের চেহারা সকলের সামনে সুস্পষ্ট হয়েছে।

তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ যে আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে স্বাধীন হয়েছিলো, বাহান্ন বছর পরও আজ তা সুদুর পরাহত। আজ বড় বড় যে সমস্ত প্রকল্প গ্রহণ করছে তা শুধুমাত্র সরকারের তল্পিবাহক লোকদের দূর্নীতি আর লুটপাটের জন্য। তার বড় প্রমাণ সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ। একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন শুধুমাত্র কোন সেতু আর ফ্লাইওভারের পিলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসনসহ রাষ্ট্রের সকল প্রতিশ্রুতি ধ্বংসের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, সরকারিদলের লোকদের দূর্নীতি ছাড়া রাষ্ট্রের সকল স্তম্ভ আজ ধ্বসে পড়েছে।

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, বাংলাদেশ গত পনের বছরের মতো এতো খারাপ অবস্থায় কখনো যায়নি। আওয়ামীলীগ স্বাধীনতার আশা আকাঙ্ক্ষার সাথে প্রতারণা করে এই রাষ্ট্রটিকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্টে সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে এদেশের অধিকাংশ মানুষ স্বাধীন নয়। গত নির্বাচনকে তারা ডমিন্যান্ট পার্টি ইলেকশন হিসেবে অভিহিত করেছে। তিনি বলেন, যেসমস্ত রাষ্ট্রে মানুষের স্বাধীনতা কম তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি কম। প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, গণতন্ত্রহীন যেসব রাষ্ট্র রয়েছে সেখানে মানুষের সমৃদ্ধি কম আবার যেখানে মানুষ স্বাধীনভাবে চলতে পারে সেখানে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অনেক বেশী। সরকার এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করলেও বাস্তবে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারন দেশের ব্যবসা বানিজ্য, বিদেশি বিনিয়োগ এবং রপ্তানি বানিজ্যে এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। এই রিপোর্ট প্রকাশের পর আমদানিরকারক রাষ্ট্র গুলো আমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, বৈদেশিক বিনিয়োগ বিঘ্নিত হবে। যা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাবে।

প্রফেসর মিনার বলেন, বাংলাদেশে আজ প্রতিটা পেশার মানুষ পরাধীন। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেনা। আজ সাংবাদিকরাও নির্যাতনের শিকার। তারা স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারেনা, সঠিক সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনা। তিনি আওয়ামীলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, এই অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করার আহবান জানান।

মিডিয়া ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার ফারুক, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, আহমাদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, যুবপার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব শাহিনুর আক্তার শীলা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ, শরণ চৌধুরী, পল্টন থানার আহবায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি ও সদস্যসচিব আব্দুল ওয়াদুদ রনি সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.