জুতার বাক্সে করে মদের বোতল নেয়া হয় হোটেল রাজমহলে
রাজধানীর নিকটবর্তী টঙ্গী বাজারের মৌলভী আব্দুল অহেদ শাহ মার্কেটের চারতলায় জমজমাট দেহ ব্যবসার আস্তানা গড়ে তুলেছে হোটেল রাজমহল আবাসিক। মদ, নারী আর জুয়ার আসর যেন হোটেলটির নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। হোটেলটির অবস্থান পাইকারী জুতার মার্কেটে হওয়ায় কাস্টমার জোগাড়ে তেমন একটা বেগ পেতে হয় না কর্তৃপক্ষের। অল্প বয়েসী পেশাদার যৌনকর্মী দিয়ে খদ্দেরদের যৌন চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আছে নেশা জাতীয় নানা দ্রব্য, নানা পন্যের বিপুল সমাহার। দেশী-বিদেশী মদসহ গাঁজা, ইয়াবা সবই যেন চাহিবা মাত্র পাওয়া যায় হোটেল রাজ মহলে।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে জুতার মার্কেটে আসেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীক কেনাকাটার করার পর যাদের রাতে থাকার প্রয়োজন হয় তাদেরকেই টার্গেট করে হোটেল কর্তৃপক্ষ। নানা সাজে সজ্জিত করে কম বয়েসী মেয়েদের উপস্থাপন করা হয় হোটেলে আগত বোর্ডারদের কাছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, পতিতারা শারীরিক সম্পর্কের সময় কৌশলে মদের খাইয়ে অচেতন করে নগদ টাকা, মোবাইলসহ মূল্যবান অনেক কিছু হাতিয়ে নেয়। ভুক্তভোগীরা জানান, এ কাজে হাত রয়েছে ম্যানেজার রাজীবসহ হোটেল পরিচালনাকারী ব্যবসায়ী রানার। অনেকে লাজ লজ্জার ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানাতে চান না। তাছাড়া পতিতা-দর সাথে ভিডিও এবং ছবি পরিবারের কাছে পৌছে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়। সেই ভয়ে অনেকে আর অভিযোগ করেন না কারো কাছে। জানা যায়, এদের একটি সংঘবদ্ধ দল রয়েছে। এই দলের অনেকে কমিশনে কাজ করে। খদ্দের জোগাড় করে দিলে নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন পায় তারা।
এই হোটেলে মদের আসর বসে নিয়মিত। কেউ যেন বুঝতে না পারে সেজন্য নিরাপত্তার জন্য জুতার বাক্সে করে মদের বোতল আনা নেয়া করা হয় বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কেটের একাধিক ব্যবসায়ী। প্রতি রাতেই বিভিন্ন বয়সের লোকজনের আগমন ঘটে হোটেল রাজমহলে।
জুয়ার আসরে মদসহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য সরবরাহ করেন হোটেল মালিক রানা ও তার সঙ্গীরা। গভীর রাত পর্যন্ত চলে জুয়ার আসরসহ নানা রকমের নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারীর করা হলেও সুকৌশলে দিনের পর দিন অবৈধ উপায়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে হোটেল মালিক রানা ও তার সঙ্গীরা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করা হলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানানো হয়।
প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করেই ব্যবসা পরিচালনা করা হয় বলে দাবী করেন ম্যানেজার রাজীব ও মালিক রানা। তারা জানান, প্রতিমাসে নিয়মিত সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার লোকদের নগদ টাকা সম্মানী দেয়া হয়। টেলিভিশন সাংবাদিকদের মাসে দুই হাজার এবং পত্রিকার সাংবাদিকদের তিনশো থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকা দেয়া হয়।